খুলনায় মাহেন্দ্র চালক ওহিদুর রহমান ওরফে রিপনকে শ্বাসরোধ ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ৪ জনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানাসহ অনাদায়ে আরও তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা পলাতক ছিল।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে খুলনা অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম আশিকুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
দন্ড প্রাপ্ত আসামির হলো, কিশোরগঞ্জ জেলার সাদির চর গ্রামের ইব্রাহিম খলিলুল্লাহর ছেলে মোহাম্মদ নুর ইসলাম, একই এলাকার হরিদাসের ছেলে জনি দাস, চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার ফল সমস্যা বাজার এলাকার আব্দুর রউফ সিকদারের ছেলে মোঃ রনি শিকদার ও বটিয়াঘাটা উপজেলা আইয়ুব আলী মোল্লার ছেলে মোহাম্মদ মাসুদ রানা মোল্লা।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাজী সাব্বির আহমেদ জানান, ওহিদুর রহমান ওরফে রিপন পেশায় একজন একজন মাহেন্দ্র চালক ছিলেন। তিনি সাতক্ষীরা জেলার লাবশা এলাকার শেখ তৌহিদুর রহমানের ছেলে। ২০১৬ সালের ১১ জানুয়ারি সকালে গাড়ি চালানোর উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন। রাতে বাড়ি ফিরে না আসলে পরিবারের মানুষ চিন্তিত হয়ে পড়ে। পরেরদিন নিহতের ছোটভাই জানতে পারেন খুলনার লবনচরা থানাধীন ডাঃ দিপু নামে একব্যক্তির জমিতে একজন যুবকের লাশ পাওয়া গেছে। সংবাদ পেয়ে নিহতের ভাই খুলনায় এসে তার লাশ শনাক্ত করেন। লাশ দাফন শেষে তিনি জানতে পারেন, গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি থেকে তার ভাইয়ের মাহেন্দ্রসহ চারজন আটক হয়েছে। পরের দিন তিনি লবনচরা থানায় এসে চারজনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
আইনজীবী সাব্বির আহমেদ ঘটনার বিবরণ দিয়ে আরও বলেন, ঘটনার দিন সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আসামিরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ি মাহেন্দ্র ছিনতাইয়ের লক্ষ্যে সাতক্ষীরা থেকে খুলনায় আসার জন্য সাত শ টাকা ভাড়ার চুক্তি করে রিপনের সাথে। রাত নয়টার দিকে নগরীর লবনচরা থানাধীন ডাঃ দিপু’র জমির নিকট পৌছালে আসামি মাসুদ ও রনি রশি দিয়ে তার শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করে। শ্বাসরোধে তার মৃত্যু না হলে নুর ইসলাম রিপনকে ছুরি দিয়ে আঘাত করতে থাকে। মৃত্যু নিশ্চিত করে আসামিরা লাশ ওইস্থানে ফেলে মাহেন্দ্র নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে গোপালগঞ্জ এলাকার কাশিয়ানি পুলিশের চেকপোষ্টে গিয়ে তারা আটক হয়। একপর্যায়ে তারা হত্যাকান্ডের কথা পুলিশের নিকট স্বীকার করে। একই বছরের ৩১ ডিসেম্বর মামালার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশ পরিদর্শক মীর আতাহার ওই আলী চারজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলা চলাকালীন ১৫ জন স্বাক্ষ্য প্রদান করেছেন।