খুলনায় প্রেমিকাকে হত্যার দায়ে প্রেমিকের যাবজ্জীবন কারাদন্ড

খুলনায় প্রেমিকা জেসমিন নাহারকে হত্যার দায়ে প্রেমিক আসাদ সরদার ওরফে আসাদউজ্জামান সরদার আরিফকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তা‌কে ৫০ হাজার টাকা জ‌রিমানা, অনাদা‌য়ে আরও এক বছ‌রের সশ্রম করাদন্ড দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসা‌মি পলাতক ছি‌ল।
দন্ড প্রাপ্ত আরিফ বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের নুরুল সরদারের ছেলে। এ মামলার অন‌্যান‌্য আসা‌মি‌দের বিরু‌দ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ কোন অ‌ভি‌যোগ প্রমাণ কর‌তে না পারায় তা‌দের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। আজ রোববার দুপুরে খুলনা অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম আশিকুর রহমান এ রায় ঘোষণা ক‌রেন।
খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলো, মো: আব্দুল হালিম গাজী, শেখ ফরহাদ আহমেদ, অনুপম মহলদার ও সৈয়দ ইমাম মোসাদ্দেকীন ওরফে মোহর।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে ওই আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাজী সাব্বির জানান, খুলনা সরকাারি মহিলা কলেজ বাউন্ডারী রোড এলাকার বসিন্দা রাশেদ মল্লিকের ছোট মেয়ে জেসমিন নাহার। ২০১৩ সালের ২৯ নভেম্বর মায়ের নাকফুল মেরামত ও প্রসাধনী কিনতে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়। পরবর্তীতে বাড়িতে ফিরে না আসায় চিন্তিত হয়ে পড়ে পরিবারের সদস্যরা। সম্ভাব্য সবস্থানে খবর নিয়েও তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। এর দু’দিন পর সকাল সোয়া ১০ টার দিকে বড় বয়রার দাসপাড়া এলাকার একটি পারিবারিক কবরস্থান থেকে পলিথিনে মোড়ানো বস্তার মধ্যে থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। ওইদিন নিহতের পিতা অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১৬ সালের ১০ জুন উল্লেখিত আসামিদের নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডির এসআই পলাশ গোলদার।
তিনি আরো জানান, হত্যাকান্ডের ছয় মাস আগে আসাদ নামে এক যুবকের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক হয়। ২০১৩ সালের ২৯ নভেম্বর বিকেলে আসাদের সাথে দেখা করতে বয়রা বন বিভাগ অফিসের সামনে আসে সেখান থেকে তকে নেওয়া হয় সৈয়দ ইমাম মোসাদ্দেকীন ওরফে মোহরের বাড়িতে। ওইখানে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় আসাদ। রাজি হয় জেসমিন। সুযোগ বুঝে আসাদ তাকে কুপ্রস্তাব দেয়। তাতে সাড়া না দেওয়ার তার জীবনের কাল হয়। প্রথমে তাকে গ্রীলের সাথে ধাক্কা দেওয়া হয়। আঘাতে জেসমিনের মাথা ও নাক ফেটে যায়। সেসময় চিৎকার করলে আসাদ জেসমিনের মুখ হাত দিয়ে চেপে রাখে। সাথে তার তিনবন্ধু জেসমিনের হাত ও পা চেপে রাখে। পরবর্তীতে তার মৃত্যু হলে পাটের তৈরি বস্তা ও নীল রং এর পলিথিন দিয়ে তার লাশ পেচিয়ে বড় বয়রা হাজী ফয়েজ উদ্দিন সড়কের কবরস্থানে ফেলে আসে তারা। কবরস্থান সংলগ্ন জনৈক আকবর আলী ধন্ধল পাড়তে ঘরের চালে উঠলে লাশ দেখে পুলিশে খরব দিলে সুরাতহাল রির্পোট তৈরি করে ময়না তদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।

 

Exit mobile version