বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী ও নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড (আইএলএফএসএল) থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ লুটপাটের ঘটনায় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
আজ মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সকাল ১০টা থেকে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। দুদকের জনসংযোগ দপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। গত ২৪ মার্চ তাদের তলব করে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদারের নিয়ন্ত্রণাধীন আইএলএফএসএল থেকে ‘কাগুজে’ প্রতিষ্ঠানের নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ইতোমধ্যে ২২টি মামলা করেছে দুদক। এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ‘কাগুজে’ প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আরও ১৩টি মামলা করেছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি। এসব মামলায় পি কে হালদারকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
এছাড়া ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি প্রায় ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে প্রথম প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা হয়। এরপর গত বছরের নভেম্বরে ৪২৬ কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে প্রায় ৬ হাজার ৮০ কোটি টাকা লেনদেনের অভিযোগে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি পি কে হালদারসহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। ক্যাসিনো অভিযানের ধারাবাহিকতায় পি কে হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় তিন হাজার ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ রয়েছে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এসব অর্থ লোপাটের তথ্য চাপা দিতো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন টিম। এসব অনিয়মে সহায়তা করতেন সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী ও নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম।
পি কে হালদার ইস্যুতে দুর্নীতির সংশ্লিষ্টতায় এ পর্যন্ত ৮৩ ব্যক্তির প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার সম্পদ আদালতের মাধ্যমে ফ্রিজ করেছে দুদক। পর্যায়ক্রমে তিন ধাপে এখন পর্যন্ত ৫২ আসামি ও অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। ২০২১ সালের ৮ জানুয়ারি দুদকের অনুরোধে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়ে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়। তার কেলেঙ্কারিতে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন ১২ জন। তাদের মধ্যে উজ্জ্বল কুমার নন্দী, পি কে হালদারের সহযোগী শংখ বেপারী, রাশেদুল হক, অবান্তিকা বড়াল ও নাহিদা রুনাইসহ ৯ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।