সুর আর কণ্ঠের মাধুর্যে মুগ্ধ করলেন এ আর রহমান

দীর্ঘ আট বছর পর আবারও ঢাকার সংগীতপ্রেমীদের সুর আর কণ্ঠের মাধুর্যে মুগ্ধ করলেন সুরের জাদুকর এ আর রহমান। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘ক্রিকেট সেলিব্রেটস মুজিব ১০০’ অনুষ্ঠানে গেয়ে মন মাতিয়েছেন উপমহাদেশের জনপ্রিয় এ সুরকার, সংগীত পরিচালক ও কণ্ঠশিল্পী। মিরপুরের শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) আয়োজিত এই মেগা কনসার্টের দ্বিতীয় পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সংগীত উপভোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি ও সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান, বিসিবি কর্মকর্তা ইসমাইল হায়দার মল্লিক, শেখ সোহেল প্রমুখ।

এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব শুরু হয়। এরপর মঞ্চে আসে জনপ্রিয় ব্যান্ডদল মাইলস। ‘চাঁদ তারা সূর্য নও তুমি/নও পাহাড়ি ঝরনা/যদি বলি ফুল তবুও হবে ভুল/তোমার তুলনা হয় না’—নব্বই দশকের সুপারহিট এই গান দিয়ে শুরু করে মাইলস। অন্যতম দেশসেরা এই ব্যান্ডদল তাদের বিখ্যাত আরও কয়েকটি গান পরিবেশন করে মাতিয়ে তোলে দর্শকদের।

উপস্থাপক রুমানা মালিক মুনমুন মাইলসের পরিবেশনার পরই সংসদ সদস্য ও জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগমকে মঞ্চে আমন্ত্রণ করেন। মমতাজ শুরু করেন তার নতুন গান ‘জয় মুজিবুর, জয় স্বাধীনতা, বাংলাদেশের জয়’ গানটি দিয়ে। এরপর একে একে গেয়ে শোনান ‘না জানি কোন অপরাধে দিলা এমন জীবন’, ‘আমার ঘুম ভাঙায়া গেলো গো মরার কোকিলে’, ‘নান্টু ঘটকের কথা শুইনা’ ও ‘বন্ধু তুই লোকাল বাস’-এর মতো মঞ্চ মাতানো গানগুলো। বহু দর্শক বিপুল উত্সাহে গলা মেলাচ্ছিল তাঁর সঙ্গে।

দর্শক প্রবল আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছিলো অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে আয়োজনের মধ্যমণি এ আর রহমান ও তার দলের জন্য। তবে এর মাঝে বাঁধা হয়ে দাড়ায় বৃষ্টি। বৃষ্টির কারণে কিছুক্ষণ বন্ধ হয়ে থাকা অনুষ্ঠান। বৃষ্টি জনিত বিরতি শেষে এ আর রহমান সদলে আলো ঝলমলে মঞ্চে এলে বাঁধভাঙা আনন্দে মাতে দর্শক। এরপর একের পর এক মনপ্রাণ ভরানো গানে এই জীবন্ত কিংবদন্তিও যেন তাদের ভালোবাসা আর মুগ্ধতার প্রতিদান দেন।

গভীর রাত পর্যন্ত এ আর রহমান ও তার সহশিল্পীরা গান গেয়ে শোনান। প্রধানমন্ত্রীসহ বিশিষ্ট অতিথি ও দর্শক-শ্রোতাদের চমৎকৃত করে গেয়ে ওঠেন ‘জয় জয় জয় বাংলাদেশ’। তার আরেকটি গানে ছিল ‘সোনার বাংলা’ কথাটিও। একসময় মঞ্চে আসেন আরেক বিশিষ্ট নাম হরিহরণ। প্রায় মধ্যরাতে আরেক চমক। ডিজিটাল প্রযুক্তির কল্যাণে মঞ্চের পর্দায় ‘আবির্ভূত হন’ সম্প্রতি প্রয়াত সংগীত কিংবদন্তি লতা মঙ্গেশকর। তার রেকর্ড করা কণ্ঠের সঙ্গে গলা মেলান এ আর রহমান। সৃষ্টি হয় সুরের ঐন্দ্রজালিক আবহ। গিটার বাজিয়ে গান করেন শিল্পী রশিদ আলী। ছিল যন্ত্রসংগীতের পরিবেশনাও।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের পর এবার দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশে এসেছেন এ আর রহমান। এর আগের বারও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের আমন্ত্রণে এসেছিলেন তিনি। বিসিবির উদ্যোগে ‘ক্রিকেট সেলিব্রেটস মুজিব ১০০’ শীর্ষক এ আয়োজন ২০২০ সালেই হওয়ার কথা ছিল। তবে করোনা মহামারির কারণে তখন আসতে পারেননি। দুই বছর পর এলেন এবং জয় করলেন বরাবরের মতোই।

Exit mobile version