খুলনার কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের ইউপি সচিব ইকবাল হোসেনকে গত ২১ মার্চ সন্ধ্যায় বেধড়ক পেটানোর ঘটনায় কয়রা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক।
আজ সোমবার দুপুর সোয়া ৩ টার দিকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের বিষযটি নিশ্চিত করেছেন কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল হোসেন। সকালে মামলা দায়েরের পর দুপুরে ঘন্টাব্যপী গ্রেফতার অভিযান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিজেই পরিচালনা করেন।
সূত্র জানায়, রাতে অফিস করতে অস্বীকৃতি জানানোয় ইউপি সচিব ইকবাল হোসেনকে গত ২১ মার্চ সন্ধ্যায় বেধড়ক মারপিট করেন কয়রা মহারাজপুরের ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। আহতবস্থায় ইউপি সচিবকে প্রথমে কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ইউপি সচিব ইকবাল হোসেন জানান,, ইউপি চেয়ারম্যান সপ্তাহের প্রায় প্রতিদিনই বিকালে অফিসে আসেন। আর গভীর রাত পর্যন্ত অফিস করেন। এতে করে সেবা প্রত্যাশীরা ভোগান্তির সম্মুখীন হন। সোমবার (২১ মার্চ) যথারীতি বিকালে ইউপি কার্যালয়ে আসেন চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মাহমুদ। কিন্তু বিকাল ৫টা বেজে যাওয়ায় সচিব অফিস ত্যাগ করেন। চেয়ারম্যান তাকে অফিসে আসতে বললে তিনি ৫টার পর অফিস করতে পারবেন না বলে জানালে চেয়ারম্যানের লোকজন তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান। সেখানে ৪ ঘণ্টা আটকে রেখে বেদম মারপিট করা হয়। সচিবের মারপিটের খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে কয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) অনিমেষ বিশ্বাস ও থানার ওসি রবিউল হোসেন ঘটনাস্থলে পৌঁছান। চেয়ারম্যান কৌশলে ইউএনও’র মাধ্যমে সচিবের মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেন। এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ইউনিয়ন পরিষদের কর্মচারিরা আন্দোলনে নামেন।
আজ সোমবার ইউপি সচিব ইকবাল হোসেন বাদি হয়ে চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদকে আসামি করে কয়রা থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর দুপুরে পুলিশ আসামি গ্রেফতারে অভিযান চালায়। দুপুর ৩ টার দিকে ইউনিয়নের দেয়াড়া গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
কয়রা থানার ওসি রবিউল হোসেন জানান, সকালে মামলা দায়েরের পর দুপুরেই অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা নং ১৬। এজাহারে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ এনেছেন বাদি। ঘটনার রাতে কোনো প্রকার মুচলেকা নেয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।